Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সুস্বাস্থ্যে চা-এর ব্যবহার

মো. মোসারফ হোসেন১ অতিথি সাহা২

চা চিরসবুজ উদ্ভিদ প্রজাতি ঈধসবষষরধ ংরহবহংরং, যার শুকানো পাতা থেকে তৈরি হয়। জনপ্রিয় পানীয়। এটি বাংলাদেশে মূলত একটি কৃষিভিত্তিক, রপ্তানিমুখী, বহুবর্ষজীবী ফসল। চা সাধারণত সুগন্ধযুক্ত, প্রশান্তিদায়ক ও স্বাদবিশিষ্ট এক ধরনের উষ্ণ পানীয়, যা অনেকেই উপভোগ করে। ক্লান্ত দেহে যখন অলসতা এসে বাসা বাঁধে তখনই এই আলস্য দূর করতে চাই এক কাপ চা। ইংরেজিতে চা-এর প্রতিশব্দ হলো টি (ঃবধ)। গ্রিকদেবী থিয়ার  নামানুসারে এরূপ নামকরণ করা হয়েছিল। চীনে ‘টি’-এর উচ্চারণ ছিল ‘চি’। পরে হয় যায় ‘চা’।
বাংলাদেশে চা শিল্পের বিকাশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ      মুজিবুর রহমানের অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে। তিনি ৪ জুন  ১৯৫৭ সাল হতে ২৩ অক্টোবর ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত প্রথম বাঙালি হিসাবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত থেকে বাঙালি জাতিকে সম্মানিত করেন। বঙ্গবন্ধু চা বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকাকালীন চা চাষাবাদ, কারখানা উন্নয়ন, অবকাঠামো ও শ্রমকল্যাণের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও কার্যকর উদ্যোগের ফলে চায়ের উৎপাদন, অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে এদেশে চা শিল্পের ব্যাপক উন্নতি সাধন হয়।
পুষ্টিগুণাগুণ
স্বাস্থ্য রক্ষায় চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিগুণ সামান্য হলেও এতে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যেমন- পলিফেনলস, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং ক্যাটেচিন। পলিফেনলস এবং ক্যাটেচিন ফ্রি রেডিক্যালস তৈরিতে বাধা দেয় এবং কোষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। একারণে চা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চায়ে উপস্থিত পলিফেনলসের পরিমাণ ২৫% এরও বেশি যা দেহের অভ্যন্তরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
চায়ে ৭% থিওফাইলিন ও থিওব্রোমিন রয়েছে যা শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির জন্য অনেক উপকারী। চা এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হলেও এতে রয়েছে ক্যাফেইন নামক উত্তেজক পদার্থ।    সাধারণত এক কাপ চায়ে রয়েছে (৩০-৪০) মিলিগ্রাম ক্যাফেইন এবং এক কাপ কফিতে এর প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ (৮৫ মিলিগ্রাম) ক্যাফেইন রয়েছে। বস্তুত ক্যাফেইনের কারনেই ঘুম কম হওয়া,হজমে ব্যঘাত ঘটা ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তবে এই ক্যাফেইনের কিছু ভালো দিকও রয়েছে। এটি হৃদপিÐ ও দেহের অন্যান্য পেশি সতেজ রাখতে সহায়তা করে।
চায়ের উপকারিতা
যেহেতু চা আমাদের প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনের নিত্যসঙ্গী, সেহেতু এই চা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু উপকারী এবং কতটুকু ক্ষতি করছে তা জানা অত্যাবশ্যক। আজ আসুন জেনে নিই চা পানের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে।
ফিগার ঠিক রাখতে অনেকেই গ্রীন টি-এর প্রতি বেশি ঝুঁকছেন। গ্রীন টি প্রথমে ছিল ওষুধ, তারপর পানীয়তে পরিণত হয়েছে। জাপানের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দিনে দুই কাপের বেশি গ্রিন টি পান করেন তারা          মানসিকভাবে অনেক বেশি ফিট। সবুজ চায়ে রয়েছে   ভিটামিন এ, সি, ই, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ছাড়াও বিভিন্ন খনিজ উপাদান যা প্রতিটি মানুষের শরীরেই প্রয়োজন। নিয়মিত সবুজ চা পান করলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও কিছুটা কমিয়ে দেয়। এছাড়াও কিডনি রোগের জন্য উপকারী। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়। পোকামাকড় কামড়ালে যদি ঐ স্থান চুলকায় ও ফুলে যায় তাহলে সবুজ চায়ের পাতা দিয়ে ঢেকে দিলে আরাম বোধ হয়। রক্তে কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমায়। ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী।
বিভিন্ন প্রকার চায়ের গুণাবলী
১. আদা চা : আদা চা খুবই উপকারী। বিশেষ করে         সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে এটি ওষুধের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। গরম আদা চা পান করলে গলাব্যথা কমে যায়। এসিডিটির বিরুদ্ধেও আদা চা কাজ করে। আদা চা পান করলে হজমের সমস্যা কমে।
২. দুধ চা : ক্লান্তি দূরীকরণে খুবই কার্যকর। নিয়মিত চা ও কফি পানে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। চা বা কফি হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৫ গুণ কমিয়ে দেয়। এছাড়া এ সময় স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ানো বলে এক গবেষণায় দেখা গেছে।
৩. লাল চা : এর মধ্যে থাকা ট্যানিন ফ্লু, ঠাÐা, ইনফ্লুয়েঞ্জা আক্রমণ ও অন্ত্রের প্রদাহ থেকে প্রতিরোধ করে দেহকে সুরক্ষা রাখে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় লাল চা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর মধ্যে থাকা ট্যানিন ফ্লু, ঠাÐা, ইনফ্লুয়েঞ্জা আক্রমণ থেকে দেহকে সুরক্ষা দেয়।
হজম ভালো করে এর মধ্যে থাকা ট্যানিন হজম প্রক্রিয়াকে সাহায্য করে। এটি অন্ত্রের সমস্যা এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে। লাল চা অন্ত্রের প্রদাহ প্রতিরোধেও কাজ করে।
গবেষণায় বলা হয়, লাল চা খাওয়া কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের জারিত হওয়া প্রতিরোধে কাজ করে। নিয়মিত লাল চা খেলে হৃৎপিন্ড ভালো রাখে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মুখের ক্যানসার প্রতিরোধ করে। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান দাঁতের ক্ষয় তৈরিকারী ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া এর মধ্যে থাকা ফ্লোরাইড মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।
লাল চায়ের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রেক্টাল, জরায়ুর ক্যানসার, ফুসফুস ও বøাডার ক্যানসার প্রতিরোধ করে। এটি স্তন ক্যানসার, প্রোস্টেট ক্যানসার ও পাকস্থলীর ক্যানসারও প্রতিরোধে কাজ করে।
অতিরিক্ত চা খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
১. চায়ের ক্যাফেইন ঘুমের চক্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। অতিরিক্ত চা পান ঘুমের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়।
২. চায়ের মধ্যে থাকা থিওফাইলিন নামে একটি রাসায়নিক উপাদান শরীরে ডিহাইড্রেশনের কারণ হতে পারে যেটা হজমে সমস্যা তৈরি করে। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
৩. ঘুমে সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে উদ্বেগ ও অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
৪. গর্ভবতী নারীদের চা পান সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা উচিত।     চা-তে উপস্থিত ক্যাফেইন ভ্রুণের বিকাশে বাধা প্রধান করতে পারে যেটা পরবর্তীতে গর্ভপাত ঘটাতে পারে।
৫. চায়ের সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হলো অতিরিক্ত চা পান প্রোস্টেট ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যারা চা পান করে না এবং যারা প্রচুর চা পান করে তাদের মধ্যে অতিরিক্ত চা পানকারীদের প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
৬. হৃৎপিÐের জন্য ক্যাফেইন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। যাদের হৃদযন্ত্রের সমস্যা আছে বা যারা হৃদরোগ থেকে আরোগ্য লাভ করছেন তাদেরকে চা এড়িয়ে চলা উচিত।
চা সম্পর্কে ভুল ধারণা
চা সম্পর্কে আমাদের অনেকের ভুল ধারণা আছে। যেমনঃ চা খেলে রাতে ঘুম আসে না, চা লিভারের ক্ষতি করে, চা চামড়া কালো করে ইত্যাদি। যদিও চা খেলে গায়ের রং কালো হবে না। কারণ ত্বকের রঙ নির্ভর করে ম্যালানোসাইট কোষের সক্রিয়তার উপর। চা পান করলে লিভারের কোন ক্ষতি হয় না। তবে এটা মনে রাখতে হবে যে, অতিরিক্ত চা পান করলে বিপরীত প্রতিক্রিয়া হবে। যেমনঃ অবসাদ ও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।
সঠিক সময়ে চা পান
সঠিক সময়ে বা উপায়ে চা পান না করলে তা শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ঘটায়। উপকারিতার পাশাপাশি শরীরে অন্য খাবার গুলো থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া থেকে বঞ্চিত এবং হজমে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে। খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চা পান করা উচিত না। এতে নিম্নোক্ত সমস্যাগুলো হতে পারে।
১. চা খাবার থেকে আয়রন শোষণ করে। কারণ চা বা কফিতে রয়েছে পলিফেনল নামক উপাদান যা আয়রন শোষণ করে বা জেস্টানিনরে সঙ্গে আয়রন মিশে শরীর থেকে বের হয়ে যায়।
২. চা শরীরে থায়ামিন বা ভিটামিন বি শোষণ রোধ করে যা বেরিবেরি রোগের অন্যতম কারণ।
৩. চা খাবার থেকে আমিষ ও ভিটামিন শোষণ করে এবং শরীর এই খাবারগুলোকে হজম করতে পারে না।
কিছু নিয়ম মেনে চললে চা পানের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। যেমনঃ
১. খাবার খাওয়ার অন্তত আধা ঘণ্টা আগে অথবা খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা পরে চা পান করা।
২. সকাল, দুপুর এবং রাতের খাবারের ১ থেকে ২ ঘণ্টা পরে চা বা কফি পান করা।
৩. যাদের হজমে ও অ¤øত্ব বা এসিডিটির সমস্যা রয়েছে তাদেরও এই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
চায়ের সাথে দুধ মেশানো ভালো না খারাপ?
চায়ে এমন অনেক সক্রিয় উপাদান আছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে। চায়ে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন থাকে। চা ইমিউন সিস্টেম বা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করে, রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে, কোষের ক্ষতি কমায় এবং কারডিওভাস্কুলার রোগ প্রতিরোধ করে। কিন্তু চায়ের মধ্যে দুধ মিশ্রিত করলে ভাস্কুলার সিস্টেম এর উপর উপকারী প্রভাব কমে যায়।
২০০২ সালে টহরঃবফ ঝঃধঃবং এর হিউম্যান নিউট্রিশন রিসার্চ সেন্টারের একটি গবেষণায় পাওয়া যায় যে, এক কাপ চায়ে ৫০ গ্রাম দুধ মেশানো হলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা ৯০% কমিয়ে দেয়। যখন চায়ের কারণে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যায় তখন শরীরের ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ক্ষমতাও কমে যায়। য়

১অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক, ডিএই, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল-০১৬৭৬৭১৩২৮০,২শিক্ষার্থী , স্নাতকোত্তর, খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান।   মোবাইল- ০১৬২৭৩২৭৮০৩, ইমেইল- atihisaha9@gmail.com

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon